বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫, ১২:৪৫ পূর্বাহ্ন

চতুর্থ দিনেও সেজে ওঠেনি বাণিজ্য মেলা

সামিয়া আফরিনঃ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা রাজধানীর আগারগাঁও থেকে সরিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নেওয়া হয়েছে। বছরের শুরুতে বাণিজ্য মেলা ঘিরে আগারগাঁওয়ে যে উৎসবের আমেজ দেখা যেত পূর্বাচলের নতুন ঠিকানায় এখনো তার দেখা মিলছে না। এখনো শেষ হয়নি অনেক স্টল ও প্যাভিলিয়নের নির্মাণ কাজ।

মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্র ও বাইরে বিভিন্ন নির্মাণ কাজ চলছে। কোথাও স্টল নির্মাণ আর কোথাও চলছে পণ্য সাজানোর কাজ। বেশ কিছু স্টলের সামনে পর্দা ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। চতুর্থ দিনেও পুরোপুরি সেজে ওঠেনি মেলা প্রাঙ্গণ।

মেয়েদের পোশাক তৈরির প্রতিষ্ঠান জয়ীতার স্টল এখনো সাজানো হয়নি। চলছে করাত আর হাতুড়ি-পেরেকের কাজ। জানতে চাইলে নির্মাণ শ্রমিক বেলাল আহমেদ জানান, ২১ ডিসেম্বর স্টল বুঝিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের দেওয়া হয়েছে মেলা শুরুর একদিন আগে। আবার প্রতিদিন রাত ৯টায় মেলা বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে স্টল তৈরির জন্য খুব একটা সময় পাওয়া যায়নি।

তবে এরই মধ্যে ওয়ালটন, প্রাণ, আরএফএল, যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স, ইলেক্ট্রো মার্ট, মিনিস্টার, স্যামসাং, দিল্লি অ্যালুমিনিয়াম, বেঙ্গল গ্রুপ, হাতিম, হাতিল, ব্রাদার্স, আলীবাবা, আখতার, নাদিয়া, রিগ্যাল, পারটেক্স, নাভানা, বেক্সিফেব্রিক্সসহ বেশ কিছু কোম্পানি নিজেদের গুছিয়ে নিয়েছে। গাজী গ্রুপের প্যাভিলিয়নে চলছে রঙ লাগানোর কাজ।

মেলা প্রাঙ্গণের স্থায়ী প্রদর্শনী কেন্দ্রে ঢোকার মুখেই চোখে পড়বে বঙ্গবন্ধু প্যাভিলিয়ন। সেখানে অনেক দর্শনার্থীকেই ফ্রেমবন্দী হতে দেখা গেছে।

বিভিন্ন স্টলের বিক্রয়কর্মীদের সঙ্গে জানা গেছে, যারা ইতোমধ্যে স্টল সাজিয়ে পণ্য তুলেছেন তাদের বিক্রি চলছে টুকিটাকি। প্রতিদিনই আগের তুলনায় লোকসমাগম বাড়ছে। বিশেষ করে সন্ধ্যা থেকে জনসমাগম বাড়ে মেলা প্রাঙ্গণে।

তবে মেলা এখনো জমজমাট হয়নি বলে জানান প্রাণের স্টলের বিক্রয়কর্মী শাকিল আহমেদ। মেলার স্থান পরিবর্তনে বিক্রিতে বেশ প্রভাব পড়েছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, ঢাকায় হলে মানুষের আনাগোনায় মেলা প্রাঙ্গণ জমজমাট থাকত। তবে এবার তেমনটি নেই। বেচাকেনাও গত তিন দিনের তুলনায় বাড়লেও কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়েনি। এবারের মেলায় বেচাকেনা ভালো হবে কিনা সেটা শুক্রবারে বুঝা যাবে।

মেলায় আগত বিভিন্ন শ্রেণীর দর্শনার্থীর সঙ্গে কথা বলে দেখা গেছে, তাদের বেশিরভাগই এসেছেন নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুরসহ পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে। তবে ঢাকা থেকেও কিছু দর্শনার্থী মেলায় যাচ্ছেন।

রাজধানীর মোহাম্মদপুর থেকে সপরিবারে মেলায় এসেছেন আবুল খায়ের। তিনি বলেন, মেলার স্থান আরও আগেই পরিবর্তন করা উচিৎ ছিল। কারণ ঢাকায় এমনিতেই দম ফেলা যায় না। তার ওপর করোনার সংক্রমণ বেড়েছে। এই মুহূর্তে তাই ঢাকার বাইরে মেলার আয়োজন করাটা ঠিক হয়েছে। তবে যাতায়াতে অসুবিধার কথাও স্বীকার করেন তিনি।

মধ্য বাড্ডা থেকে বান্ধবীকে নিয়ে এসেছেন লায়ন্স আই হসপিটালের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, মেলায় এসে খুব ভালো লাগছে। বান্ধবীকে শাড়ি কিনে দেব। সামনেও আসার প্ল্যান আছে। তবে আগে যেখানে মেলা হতো সেটা খুব কাছে থাকলেও এবার দূরত্বটা বেশি। এটাই একটু সমস্যা। যাতায়াতের রাস্তা মেরামত হওয়ায় আসতে খুব একটা সমস্যা হয়নি বলে জানান তিনি।

ওয়ালটন প্যাভিলিয়নের ইনচার্জ প্রকৌশলী মো. বাদল ইসলাম জানান, আগের তিন দিনের তুলনায় মেলায় দর্শক-ক্রেতার সংখ্যা বেড়েছে। আশা করছি, সামনের দিনগুলোতে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com